ইসলামে বন্দী মুক্তি" পর্ব:- ২

 ইসলামে বন্দী মুক্তি"

পর্ব:- ২




ইবনে কুদামা আল হাম্বলী রহঃ বলেন, মুসলিম বন্দীদের মুক্ত করার জন্য মুক্তিপণ আদায় করা বাধ্যতামূলক যার সামর্থ্য আছে

ইমাম নববী (রহঃ) মতে শত্রুর হাতে একজন মুসলিম বন্দী হওয়া সমগ্র ইসলামী রাষ্ট্রের নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হওয়া থেকে মারত্বক ।

কেননা একজন মুসলিম বন্দীর জীবনের মূল্য মুসলিম রাষ্ট্রের চেয়ে অনেক অনেক বেশি

মুসলিম বন্দীদের মুক্তির ব্যাপারে আমাদের পূর্ববর্তীদের মানসিকতা কেমন ছিল‌ ?

খলিফা মানসুর বিন আবু আমীর উওর আন্দালুসিয়া যুদ্ধ থেকে ফিরে আসছিলেন কারডোভার দিকে

পথে একজন মুসলিম মহিলা খলিফার পথ রোধ করে দাঁড়াও এবং জানায় খিস্ট্রানেরা আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে

হয় আপনি তাকে যুদ্ধ করে ছড়িয়ে নিয়ে আসেন অথবা মুক্তি পণ দিয়ে মুক্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন

খলিফা মানসুর এ কথা শুনা মাত্রই কারডোভাতে প্রবেশ না করে নিজ বাহিনীর সাথে মিলিত হলেন এবং সেই মুসলিম বন্দীকে ছড়িয়ে নিয়ে আসলেন

আল হাকাম বিন হিশাম একজন মাএ মুসলিম মহিলাকে মুক্ত করার জন্য

শত্রুর এলাকায় শুধু আক্রমণ করে
ক্ষান্ত্র থাকেন নি

পুরো শত্রু এলাকা উলোট পালোট করে দিয়ে শত্রুদের পদানত করে
সেই মুসলিম মহিলাকে মুক্ত করে কারডোভায় ফিরেয়ে নিয়ে এসেছেন

খলিফা মোতাশিমার ঘটনা নিশ্চয় আপনাদের মনে আছে

কোথায় বহুদূরে দেশে গিয়ে কাফিরদের হাতে এক বন্দী নারী চিৎকার করে বলেছিল

ওহ মোতাশিমা
হে খলিফা মোতাশিম‌
কোথায় তুমি ?
আমাকে সাহায্য কর

একটি মাত্র মুসলিম বোনের আত্নচিৎকারে খলিফা মোতাশিম
পাগল হয়ে গিয়েছিলেন

পুরো মুসলিম সেনা বাহিনী
তিনি রওনা করে দিয়ে ছিলেন
এই একটি মাত্র বোনকে উদ্ধারের জন্য


মনে আছে ,
মোহাম্মদ বিন কাশিমের কথা
হিন্দু রাজা দাহিরের হাতে এক মুসলিম বোন নির্যাতিত হয়েছিল
এই খবর পেয়ে সূদূর আরব থেকে হিন্দুস্তানে ছূটে এসেছিলেন
১৮ বছরের টগবগে মুজাহিদ

মোহাম্মদ বিন কাশিম এমনি ছিলেন আমাদের পূর্বসূরীগণ
যখনি তারা কোন মুসলিম বন্দীর
কথা শুনতেন সেই বন্দীকে মুক্ত না করা পর্যন্ত তারা অন্য কিছুতে স্থীর হতে পারতেন না

প্রিয় ভাই ও বোনেরা
এবার আমাদের নিজেদের অবস্থা
একটু চিন্তা করে দেখি আমাদের অবস্থান কোথায় !?

ইরাকের আবু গারিব কারাগারে বন্দি নূর এবং ফাতিমা যখন চিৎকার করে বলেছিল,

"হে মুজাহিদ ভাইয়েরা
তোমরা কোথায়?

প্রতি রাতে ওদের অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছিনা। তখনও আমাদের বিবেক জাগ্রত হয়নি।

মুসলিম বিশ্বের গৌরব ড.আফিয়া সিদ্দিকি মার্কিন কারাগারে রাতের পর রাত ধর্ষিতা হয়ে তিলে তিলে নেই হয়ে গেলেন। তখনও আমাদের বিবেক জাগ্রত হয়নি।

আরাকান ,কাশ্মির ,উইঘুর ,সিরিয়া সর্বত্র জ্বলছে, ক্রমশই উঁচু হচ্ছে মাজলুমের আহাজারি

হে ভাই! তারপরও
আমরা কি জাগ্রত হবনা !!

আমাদের কি এই অলসতার ঘুম ভাঙ্গবেনা!
আমরা আর কতদিন এভাবে গাফলতির ঘুম ঘুমাবো?
আমাদের শরীরের রক্ত কি একদম নিস্তেজ হয়ে গেছে!

আমরা কি আমাদের পৌরষত্ব হারিয়ে ফেলেছি!!

হে প্রিয় ভাই!
আপনি বিশ্বাস করুন!

হে প্রিয় উম্মাহ!
আপনারা দেখছেন
আজ পৃথিবীর সর্বত্র মুসলমানরা নির্যাতিত, নিপিড়ীত,নিস্পেষিত। আজ মুসলিমরা অপেক্ষা করছে একজন মুহাম্মদ বিন কাসিমের, তারিক বিন জিয়াদের" সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর ও নুরুদ্দীন জঙ্গীর"

হে ভাই!একটাবার ভাবুন তো! আমরা কি আমাদের দায়িত্ব আদায় করে ফেলেছি! বা আদায় করার কথা কখনো ভেবেছি?

___নীরবতার প্রাচীর
বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

0 মন্তব্যসমূহ