আমাদের পরিচয় (ঐক্য ও বিভেদ)
আজ আমরা দলে দলে বিভক্ত, বড় বড় আকীদার ব্যাপার বাদ দিয়ে একে অপরকে তাকফীর করায় ব্যস্ত।
দেওবন্দ – উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে এই মাদ্রাসার অবস্থান। ১৮৬৬ সালে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত এটির প্রতিষ্ঠা করেন। মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি তাদের প্রধান ছিলেন। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহী ও সৈয়দ আবিদ হুসাইন।
তার মানে ১৮৬৬ সালের আগে কাউকে দেওবন্দী বলা হতো না।
বেরেলভী – নামটি উত্তর ভারতের শহর বেরেলি থেকে। যেটি আহমদ রেজা খানের (১৮৫৬-১৯২১) জন্মস্থান। যদিও বেরেলভী সাধারণভাবে ব্যবহৃত শব্দ, আন্দোলনটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত-এর শিরোনাম দ্বারাও পরিচিত (উর্দু: اهل سنت وجماعت)। সুন্নি সম্প্রদায়ের জন্য ফকিহ নাম, একটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায়ের পরিবর্তে মূলধারার সুন্নি হিসেবে তাদের আত্ম-উপলব্ধির উল্লেখ। এর অনুসারীদের কাছে আন্দোলন হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, অথবা “ঐতিহ্য ও সম্প্রদায়ের মানুষ” এবং তারা নিজেদেরকে সুন্নি বলে উল্লেখ করে।
১৯০০ সালে বা তার আগে কারো পরিচয় বেরলভি’ ছিলো না।
আহলে হাদীস – পরিভাষাটি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ. এর হাত ধরেই উৎপত্তি লাভ করে। এর পূর্বে হুবহু এ শব্দটির ব্যবহার তেমন পাওয়া যায় না। অবশ্য অনকের মতে আহলে হাদীস শব্দের সমর্থক শব্দের ব্যবহার এর পূর্বের যুগেও লক্ষ্য করা যায়। নবম শতাব্দিতে শাসক মামুনুর রশীদের রাজত্বে যখন কুরআন আল্লাহর সৃষ্টি কি সৃষ্টি নয়- এ দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিয়ে উঠে তখন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল স্বোচ্ছার হোন। এবং তার তখন থেকেই আহলুল হাদীস শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় উঠে আসে। ফলে শব্দটি একটি পারিভাষিক রূপ পরিগ্রহ করে।
তেমনিভাবে বিভিন্ন তরিকাসহ বিভিন্ন পরিচয় সাহাবীদের যুগে ছিলো না। পূর্ববর্তী নবীগণ ও সাহাবীরা নিজেদের মুসলিম হিসেবে পরিচিতি দিতেন।
ইয়াকুব (আঃ) এর উপাধি ছিল ইসরায়েল অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা আর তার বংশধরদের বলা হতো বনী ইসরায়েল। কিন্তু তাদের দ্বীন ছিল ইসলাম আর পরিচয় ছিল মুসলিম। এর পরবর্তীতে ইয়াকুব (আঃ) এর এক ছেলে ইয়াহুদের নাম অনুযায়ী নিজেদের পরিচয় দিতে থাকে ইয়াহুদী। আস্তে আস্তে মুসলিম পরিচয় হারিয়ে গেল। বনী ইসরায়েল ও ইহুদিরা বহু দলে বিভক্ত হয় এবং প্রত্যেক দল একমাত্র নিজেদের হক্ব ও নাজাতপ্রাপ্ত ভাবতো।
একই পথে আমরা চলছি- রসুল, নবী ও সাহাবী আমাদের পরিচয় দিয়েছে মুসলিম কিন্তু আমরা বহু তরীকা, আলেমের অনুসরণ করতে গিয়ে দলে দলে বিভক্ত হয়ে নিজেদের আসল পরিচয় ভুলতে বসেছি। আর বেশিরভাগ দলই একমাত্র নিজেদের নাজাতপ্রাপ্ত ভাবে।
আল্লাহ বলেন –
"ইহুদিরা বলে, “ইহুদি হয়ে যাও, তাহলে সঠিক পথ পেয়ে যাবে৷” খৃস্টানরা বলে, “খৃস্টান হয়ে যাও, তা হলে হিদায়াত লাভ করতে পারবে৷ ওদেরকে বলে দাও, “না, তা নয়; বরং এ সবকিছু ছেড়ে একমাত্র ইবরাহীমের পদ্ধতি অবলম্বন করো৷ আর ইবরাহীম মুশরিকদের অন্তরভুক্ত ছিল না।" (সূরা বাকারা: ১৩৫)
আরও বর্নিত আছে-
"এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদিগকে মনোনিত করিয়াছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেন নাই। ইহা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি (আল্লাহ্) পূর্বে তোমাদের নামকরণ করিয়াছেন ‘মুসলিম’ এবং এই কিতাবেও।" (সূরা হাজ্জ: ৭৮)
অথচ ইয়াকুবের (আঃ) মৃত্যুর সময় নিজের পরিচয় দিয়েছে মুসলিম ও মুসলিম থাকার অঙ্গীকার নিয়েছিল।
কুরআনে বর্ণিত,
"তোমরা কি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুব এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছিল? মৃত্যুকালে সে তার সন্তানদের জিজ্ঞেস করলো, আমার পর তোমরা কার বন্দেগী করবে? তারা সবাই জবাব দিল, আমরা সেই এক আল্লাহর বন্দেগী করবো, যাকে আপনি এবং আপনার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক ইলাহ হিসেবে মেনে এসেছেন আর আমরা তাঁরই অনুগত মুসলিম৷" (সূরা বাকারাহঃ ১৩৩)
তেমনি প্রিয় রসুল (সাঃ), সাহাবী, তাবেয়ীরা নিজেদের মুসলিম পরিচয় নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর অন্যরা ভক্তির নাম দিয়ে বাড়াবাড়ি করেছে যেমনটা বনী ইসরায়েল করেছিল।
আল্লাহ বলেন –
"আর ইয়াহুদীরা বলে, ‘উযাইর আল্লাহর পুত্র’ এবং খ্রিষ্টানরা বলে, ‘মসীহ আল্লাহর পুত্র।’ এটা তাদের মুখের কথা মাত্র (বাস্তবে তা কিছুই নয়)। তারা তো তাদের মতই কথা বলছে, যারা তাদের পূর্বে অবিশ্বাস করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন, তারা উল্টো কোনদিকে যাচ্ছে।" (সুরা তওবাঃ ৩০)
প্রথমে একদল আলী (রাঃ)-কে আল্লাহর রূপ দাবী করে বাড়াবাড়ি করলো নাউজুবিল্লাহ!! আবার আরেক দল ঈসা (আঃ) পরবর্তী সংসার বিরাগীদের মত মুরজিয়া আকীদা গ্রহণ করে খ্রিস্টান পরিচয় গ্রহণ করলো। বর্তমানে অধিকাংশই জেহাদ ভুলে সে পথ অনুসরণ করছে।
অথচ ঈসা (আঃ) এর পরিচয় ছিল মুসলিম।
আল্লাহ বলেন –
"যখন ঈসা অনুভব করলো,তারা (বনী ইসরাঈল) কুফরী ও অস্বীকার করতে উদ্যেগী হয়েছে, সে বললো, ‘‘কে হবে আল্লাহর পথে আমার সাহায্যকারী? হাওয়ারীগণ বলল, আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী৷ আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি ৷ সাক্ষী থাকো, আমরা মুসলিম।" (সূরা আল ইমরান: ৫২)
একই পরিচয় অন্য নবীরা দিয়েছিল।
কুরআনে বর্নিত-
“হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে রাজ্য দান করিয়াছ এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়াছ। হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা! তুমিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক। তুমি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দাও এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের আর্ন্তভুক্ত কর।” (সূরা ইউসুফ: ১০১)
আমরা ঐক্য চাই অথচ বিভিন্ন নামে ও দলে বিভক্ত। অথচ খলিফা মাহাদী ও ঈসা (আঃ) এর সময় গাছ ও পাথর বলবে – হে মুসলিম! ও আবদু্ল্লাহ (আল্লাহর বান্দা) আমার পিছে ইয়াহুদী লুকিয়ে আছে। (মুসলিম শরীফ)।
বিভিন্ন ঈমাম ও আলেমদের মাধ্যমে আমরা দ্বীনের অনেক কিছু জানতে পেরেছি আর তাদের কথা রসুলুল্লাহ (সা) ও সাহাবীদের আর্দশের সাথে মিলে যাচ্ছে তাই মানছি। এর অর্থ এই নয় কেউ শুধু ঈমামদের পথের অনুসারী। বরং রসুলুল্লাহর (সাঃ) পথের অনুসারী যা ঈমামগন রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ হতে জানিয়েছেন।
তেমনি সহীহ সিত্তাহের হাদীসের ব্যাপারে ঐক্যমত আছে- অনেক কিছুই ঈমাম বুখারী, মুসলিম হতে জেনেছে। আজ পর্যন্ত শুনেছেন কেউ পরিচয় দেয় আমি বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী মাজহাবের অনুসারী বরং যারা সব সহীহ হাদীস মেনে চলে তারাই মুসলিম।আমাদের তাওহীদে নির্দিষ্ট ব্যক্তি/ ফিরকার মাঝে সীমাবদ্ধ না হয়ে যায়!
তাওহীদের দাওয়াত নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা আলেম, ওলামার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং প্রতিটি মুসলিম যারা জেনে বুঝে ইসলাম গ্রহন করেছে, দাওয়াত দেওয়ার অধিকার ও দায়িত্ব রয়েছে!! কিন্তু আবেগী জাতির অনেকের মনোভাব এমন- তাদের আলেম যা বলে বা করে সবাই সঠিক। তাদের কর্মকাণ্ড কুরআন, সুন্নাহ বিপরীত হলেও সমালোচনা করা যাবে না।অথচ
আল্লাহ বলেন-
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। (সুরা আল ইমরান-১১০)
ধরুন আপনার প্রতিবেশী, নিকট আত্মীয় বা নিজ গৃহে আগুন লাগলো, আপনি কি ফায়ার সার্ভিসের অপেক্ষায় থাকবেন শুধু! যেহেতু আগুন নেভাতে তারা দক্ষ! অথচ ওদের অপেক্ষায় থাকলে হয়তো আপনার আমার প্রানের স্বজন পুড়ে মারা যেতে পারে, নাকি নিজেও যথাসম্ভব সার্মথ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবেন আগুন নেভানোর! একটু ভাবুন কোনটা উত্তম ও প্রকৃত মুসলিমের দায়িত্ব।
ঠিক তেমনি আমাদের চারপাশে অনেকে হয়তো ইলমের অভাবে কুফর, শিরকে লিপ্ত, তাওহীদের সঠিক ধারনা পৌছে নি। সেজন্য কি আমি, আপনি আলেমদের জন্য অপেক্ষা করবো শুধু! যাতে তারা কুফর, শিরকে লিপ্ত হয়ে মৃত্যুবরন করে জাহান্নামের আগুনে জ্বলে! নাকি সঠিক তাওহীদের দাওয়াত দিবেন যেন তারা দ্বীন ইসলাম গ্রহন করে জান্নাতে আমাদের সাথী হতে পারে।
আবার ধরুন- প্রশাসনের (ইসলামী প্রশাসন) দায়িত্ব হল - আমাদের জানমাল, ইজ্জত রক্ষার চেষ্টা করা! অথচ প্রশাসনের কোন লোক যদি তা না করে উল্টো আমার আপনার বোন, মেয়ের ইজ্জত হরনের চেষ্টা করে আপনি কি নির্বিকার দেখবেন! যেহেতু আপনি কোন প্রশাসনের লোক নন, নাকি প্রতিরোধ করবেন!?
তেমনি যখন পথভ্রষ্ট আলেম জালেমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শিরক, কুফর ছড়ায় তখন দ্বীন ইসলাম জানা মুসলিমের দায়িত্ব হল সত্য জানানো, প্রতিবাদ ও সামর্থ্য থাকলে প্রতিরোধ করা।
রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ ‘এমন কিছু রয়েছে যেটির ব্যাপারে আমি আমার উম্মাহ্-এর জন্য দাজ্জালের অপেক্ষাও অধিক ভয় করি।’ তখন আমি ভীত হয়ে পড়লাম, তাই আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি কোন জিনিস, যার ব্যাপারে আপনি আপনার উম্মাহ্-এর জন্য দাজ্জালের চাইতেও অধিক ভয় করেন?’ তিনি [রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, ‘পথভ্রষ্ট ’আলিম গণ।’” (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং. ২০৩৩৫)।
আমার আপনার মা, বোন, স্বজনের জীবনের চেয়ে তাওহীদের মূল্য অনেক বেশি! মুসলিম জানমাল, পরিবার সবকিছু বিসর্জন দিত তাওহীদ প্রতিষ্ঠায়!!
আল্লাহ বলেন-
বলুন, তোমাদের নিকট যদি আল্লাহ, তার রাসূল এবং তাঁর (আল্লাহর) পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয় তোমাদের পিতৃবর্গ, তোমাদের সন্তানরা, তোমাদের ভ্রাতাগণ, তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের আপনগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালবাস, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না। (সুরা তওবা-২৪)
আবার অনেকে ইসলামের দাওয়াতকে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়বস্তুর উপর সীমাবদ্ধ রেখেছে! জেহাদ, আহলে বায়াত, খেলাফত, রাজতন্ত্র এসব আলোচনা করলে নাকি ফেতনা ছড়াবে! তাই অন্যদের দাওয়াতে বাধা দেয়। ভাই, আগে বুঝেন- কুরআন, সুন্নাহে এমনকিছু নেই যে আলোচনা করলে ফেতনা ছড়াবে।
এমন যদি হত রসুল (সা:) ও সাহাবীরা হাদীস বর্ননা ও ব্যাখা করতেন না! বরং ইসলাম মিথ্যাকে ধ্বংস করে ফেতনামুক্ত করে, সত্য প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখে!!
আল্লাহ বলেন - বল, ‘সত্য এসে গেছে আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত হওয়ারই। (সুরা বনী ইসরায়েল -৮১)
কুরআনে এসেছে -
নিশ্চয় তা (কুরআন সত্য-মিথ্যার) পার্থক্যকারী বাণী। (সুরা আত্ব তারিক -১৩)
তাই কুরআন, সুন্নাহর সাথে মিলে এমন সকল মতবাদ আমাদের গ্রহন করতে হবে, আর বিপরীত সকল মতবাদ পরিতাজ্য তা যেই বলুক না কেন!
যারা তাগুত,আল ওয়ালা ওয়াল বারা, আহলে বায়াতের ফজিলত বর্ননা করে না যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারা আসলে কি ইসলামের খেদমত করছে!! না জনপ্রিয় হওয়া ও অর্থ কামানো মূল লক্ষ্য।
গনতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ নিয়ে একই মাযহাবের আলেমের মত ভিন্ন ভিন্ন - কারো মতো শিরক,কারো মতে এই যুগে জায়েজ। উম্মত এই নিয়ে বিভ্রান্ত।
আকীদা ভিন্ন হয়েও তারা উভয়ই একই মাযহাবের(অদ্ভুত)
, উভয়ই সম্মান পায় অথচ সামান্য মাসয়ালাগত দ্বন্দ্ব নিয়ে অন্যদের ওরাই কাফের ফাতেয়া দেয়!!
ঈমাম ও আলেমগণ হলো জানার মাধ্যম যার ভিত্তিতে রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ জানা হয়, যা মিলল তা মানলে রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ, বা পথ মানা হয়।আমাদের পরিচয়(ঐক্য ও বিভেদ)
আজ আমরা দলে দলে বিভক্ত, বড় বড় আকীদার ব্যাপার বাদ দিয়ে একে অপরকে তাকফীর করায় ব্যস্ত।
দেওবন্দ – উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে এই মাদ্রাসার অবস্থান। ১৮৬৬ সালে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত এটির প্রতিষ্ঠা করেন। মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি তাদের প্রধান ছিলেন। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহী ও সৈয়দ আবিদ হুসাইন।
তার মানে ১৮৬৬ সালের আগে কাউকে দেওবন্দী বলা হতো না।
বেরেলভী – নামটি উত্তর ভারতের শহর বেরেলি থেকে। যেটি আহমদ রেজা খানের (১৮৫৬-১৯২১) জন্মস্থান। যদিও বেরেলভী সাধারণভাবে ব্যবহৃত শব্দ, আন্দোলনটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত-এর শিরোনাম দ্বারাও পরিচিত (উর্দু: اهل سنت وجماعت)। সুন্নি সম্প্রদায়ের জন্য ফকিহ নাম, একটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায়ের পরিবর্তে মূলধারার সুন্নি হিসেবে তাদের আত্ম-উপলব্ধির উল্লেখ। এর অনুসারীদের কাছে আন্দোলন হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, অথবা “ঐতিহ্য ও সম্প্রদায়ের মানুষ” এবং তারা নিজেদেরকে সুন্নি বলে উল্লেখ করে।
১৯০০ সালে বা তার আগে কারো পরিচয় বেরলভি’ ছিলো না।
আহলে হাদীস – পরিভাষাটি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ. এর হাত ধরেই উৎপত্তি লাভ করে। এর পূর্বে হুবহু এ শব্দটির ব্যবহার তেমন পাওয়া যায় না। অবশ্য অনকের মতে আহলে হাদীস শব্দের সমর্থক শব্দের ব্যবহার এর পূর্বের যুগেও লক্ষ্য করা যায়। নবম শতাব্দিতে শাসক মামুনুর রশীদের রাজত্বে যখন কুরআন আল্লাহর সৃষ্টি কি সৃষ্টি নয়- এ দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিয়ে উঠে তখন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল স্বোচ্ছার হোন। এবং তার তখন থেকেই আহলুল হাদীস শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় উঠে আসে। ফলে শব্দটি একটি পারিভাষিক রূপ পরিগ্রহ করে।
তেমনিভাবে বিভিন্ন তরিকাসহ বিভিন্ন পরিচয় সাহাবীদের যুগে ছিলো না। পূর্ববর্তী নবীগণ ও সাহাবীরা নিজেদের মুসলিম হিসেবে পরিচিতি দিতেন।
ইয়াকুব (আঃ) এর উপাধি ছিল ইসরায়েল অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা আর তার বংশধরদের বলা হতো বনী ইসরায়েল। কিন্তু তাদের দ্বীন ছিল ইসলাম আর পরিচয় ছিল মুসলিম। এর পরবর্তীতে ইয়াকুব (আঃ) এর এক ছেলে ইয়াহুদের নাম অনুযায়ী নিজেদের পরিচয় দিতে থাকে ইয়াহুদী। আস্তে আস্তে মুসলিম পরিচয় হারিয়ে গেল। বনী ইসরায়েল ও ইহুদিরা বহু দলে বিভক্ত হয় এবং প্রত্যেক দল একমাত্র নিজেদের হক্ব ও নাজাতপ্রাপ্ত ভাবতো।
একই পথে আমরা চলছি- রসুল, নবী ও সাহাবী আমাদের পরিচয় দিয়েছে মুসলিম কিন্তু আমরা বহু তরীকা, আলেমের অনুসরণ করতে গিয়ে দলে দলে বিভক্ত হয়ে নিজেদের আসল পরিচয় ভুলতে বসেছি। আর বেশিরভাগ দলই একমাত্র নিজেদের নাজাতপ্রাপ্ত ভাবে।
আল্লাহ বলেন –
"ইহুদিরা বলে, “ইহুদি হয়ে যাও, তাহলে সঠিক পথ পেয়ে যাবে৷” খৃস্টানরা বলে, “খৃস্টান হয়ে যাও, তা হলে হিদায়াত লাভ করতে পারবে৷ ওদেরকে বলে দাও, “না, তা নয়; বরং এ সবকিছু ছেড়ে একমাত্র ইবরাহীমের পদ্ধতি অবলম্বন করো৷ আর ইবরাহীম মুশরিকদের অন্তরভুক্ত ছিল না।" (সূরা বাকারা: ১৩৫)
আরও বর্নিত আছে-
"এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদিগকে মনোনিত করিয়াছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেন নাই। ইহা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি (আল্লাহ্) পূর্বে তোমাদের নামকরণ করিয়াছেন ‘মুসলিম’ এবং এই কিতাবেও।" (সূরা হাজ্জ: ৭৮)
অথচ ইয়াকুবের (আঃ) মৃত্যুর সময় নিজের পরিচয় দিয়েছে মুসলিম ও মুসলিম থাকার অঙ্গীকার নিয়েছিল।
কুরআনে বর্ণিত,
"তোমরা কি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুব এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছিল? মৃত্যুকালে সে তার সন্তানদের জিজ্ঞেস করলো, আমার পর তোমরা কার বন্দেগী করবে? তারা সবাই জবাব দিল, আমরা সেই এক আল্লাহর বন্দেগী করবো, যাকে আপনি এবং আপনার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক ইলাহ হিসেবে মেনে এসেছেন আর আমরা তাঁরই অনুগত মুসলিম৷" (সূরা বাকারাহঃ ১৩৩)
তেমনি প্রিয় রসুল (সাঃ), সাহাবী, তাবেয়ীরা নিজেদের মুসলিম পরিচয় নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর অন্যরা ভক্তির নাম দিয়ে বাড়াবাড়ি করেছে যেমনটা বনী ইসরায়েল করেছিল।
আল্লাহ বলেন –
"আর ইয়াহুদীরা বলে, ‘উযাইর আল্লাহর পুত্র’ এবং খ্রিষ্টানরা বলে, ‘মসীহ আল্লাহর পুত্র।’ এটা তাদের মুখের কথা মাত্র (বাস্তবে তা কিছুই নয়)। তারা তো তাদের মতই কথা বলছে, যারা তাদের পূর্বে অবিশ্বাস করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন, তারা উল্টো কোনদিকে যাচ্ছে।" (সুরা তওবাঃ ৩০)
প্রথমে একদল আলী (রাঃ)-কে আল্লাহর রূপ দাবী করে বাড়াবাড়ি করলো নাউজুবিল্লাহ!! আবার আরেক দল ঈসা (আঃ) পরবর্তী সংসার বিরাগীদের মত মুরজিয়া আকীদা গ্রহণ করে খ্রিস্টান পরিচয় গ্রহণ করলো। বর্তমানে অধিকাংশই জেহাদ ভুলে সে পথ অনুসরণ করছে।
অথচ ঈসা (আঃ) এর পরিচয় ছিল মুসলিম।
আল্লাহ বলেন –
"যখন ঈসা অনুভব করলো,তারা (বনী ইসরাঈল) কুফরী ও অস্বীকার করতে উদ্যেগী হয়েছে, সে বললো, ‘‘কে হবে আল্লাহর পথে আমার সাহায্যকারী? হাওয়ারীগণ বলল, আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী৷ আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি ৷ সাক্ষী থাকো, আমরা মুসলিম।" (সূরা আল ইমরান: ৫২)
একই পরিচয় অন্য নবীরা দিয়েছিল।
কুরআনে বর্নিত-
“হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে রাজ্য দান করিয়াছ এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়াছ। হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা! তুমিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক। তুমি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দাও এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের আর্ন্তভুক্ত কর।” (সূরা ইউসুফ: ১০১)
আমরা ঐক্য চাই অথচ বিভিন্ন নামে ও দলে বিভক্ত। অথচ খলিফা মাহাদী ও ঈসা (আঃ) এর সময় গাছ ও পাথর বলবে – হে মুসলিম! ও আবদু্ল্লাহ (আল্লাহর বান্দা) আমার পিছে ইয়াহুদী লুকিয়ে আছে। (মুসলিম শরীফ)।
বিভিন্ন ঈমাম ও আলেমদের মাধ্যমে আমরা দ্বীনের অনেক কিছু জানতে পেরেছি আর তাদের কথা রসুলুল্লাহ (সা) ও সাহাবীদের আর্দশের সাথে মিলে যাচ্ছে তাই মানছি। এর অর্থ এই নয় কেউ শুধু ঈমামদের পথের অনুসারী। বরং রসুলুল্লাহর (সাঃ) পথের অনুসারী যা ঈমামগন রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ হতে জানিয়েছেন।
তেমনি সহীহ সিত্তাহের হাদীসের ব্যাপারে ঐক্যমত আছে- অনেক কিছুই ঈমাম বুখারী, মুসলিম হতে জেনেছে। আজ পর্যন্ত শুনেছেন কেউ পরিচয় দেয় আমি বুখারী, মুসলিম, নাসায়ী মাজহাবের অনুসারী বরং যারা সব সহীহ হাদীস মেনে চলে তারাই মুসলিম।আমাদের তাওহীদে নির্দিষ্ট ব্যক্তি/ ফিরকার মাঝে সীমাবদ্ধ না হয়ে যায়!
তাওহীদের দাওয়াত নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা আলেম, ওলামার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং প্রতিটি মুসলিম যারা জেনে বুঝে ইসলাম গ্রহন করেছে, দাওয়াত দেওয়ার অধিকার ও দায়িত্ব রয়েছে!! কিন্তু আবেগী জাতির অনেকের মনোভাব এমন- তাদের আলেম যা বলে বা করে সবাই সঠিক। তাদের কর্মকাণ্ড কুরআন, সুন্নাহ বিপরীত হলেও সমালোচনা করা যাবে না।অথচ
আল্লাহ বলেন-
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। (সুরা আল ইমরান-১১০)
ধরুন আপনার প্রতিবেশী, নিকট আত্মীয় বা নিজ গৃহে আগুন লাগলো, আপনি কি ফায়ার সার্ভিসের অপেক্ষায় থাকবেন শুধু! যেহেতু আগুন নেভাতে তারা দক্ষ! অথচ ওদের অপেক্ষায় থাকলে হয়তো আপনার আমার প্রানের স্বজন পুড়ে মারা যেতে পারে, নাকি নিজেও যথাসম্ভব সার্মথ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবেন আগুন নেভানোর! একটু ভাবুন কোনটা উত্তম ও প্রকৃত মুসলিমের দায়িত্ব।
ঠিক তেমনি আমাদের চারপাশে অনেকে হয়তো ইলমের অভাবে কুফর, শিরকে লিপ্ত, তাওহীদের সঠিক ধারনা পৌছে নি। সেজন্য কি আমি, আপনি আলেমদের জন্য অপেক্ষা করবো শুধু! যাতে তারা কুফর, শিরকে লিপ্ত হয়ে মৃত্যুবরন করে জাহান্নামের আগুনে জ্বলে! নাকি সঠিক তাওহীদের দাওয়াত দিবেন যেন তারা দ্বীন ইসলাম গ্রহন করে জান্নাতে আমাদের সাথী হতে পারে।
আবার ধরুন- প্রশাসনের (ইসলামী প্রশাসন) দায়িত্ব হল - আমাদের জানমাল, ইজ্জত রক্ষার চেষ্টা করা! অথচ প্রশাসনের কোন লোক যদি তা না করে উল্টো আমার আপনার বোন, মেয়ের ইজ্জত হরনের চেষ্টা করে আপনি কি নির্বিকার দেখবেন! যেহেতু আপনি কোন প্রশাসনের লোক নন, নাকি প্রতিরোধ করবেন!?
তেমনি যখন পথভ্রষ্ট আলেম জালেমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শিরক, কুফর ছড়ায় তখন দ্বীন ইসলাম জানা মুসলিমের দায়িত্ব হল সত্য জানানো, প্রতিবাদ ও সামর্থ্য থাকলে প্রতিরোধ করা।
রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ ‘এমন কিছু রয়েছে যেটির ব্যাপারে আমি আমার উম্মাহ্-এর জন্য দাজ্জালের অপেক্ষাও অধিক ভয় করি।’ তখন আমি ভীত হয়ে পড়লাম, তাই আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্র রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি কোন জিনিস, যার ব্যাপারে আপনি আপনার উম্মাহ্-এর জন্য দাজ্জালের চাইতেও অধিক ভয় করেন?’ তিনি [রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেন, ‘পথভ্রষ্ট ’আলিম গণ।’” (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং. ২০৩৩৫)।
আমার আপনার মা, বোন, স্বজনের জীবনের চেয়ে তাওহীদের মূল্য অনেক বেশি! মুসলিম জানমাল, পরিবার সবকিছু বিসর্জন দিত তাওহীদ প্রতিষ্ঠায়!!
আল্লাহ বলেন-
বলুন, তোমাদের নিকট যদি আল্লাহ, তার রাসূল এবং তাঁর (আল্লাহর) পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয় তোমাদের পিতৃবর্গ, তোমাদের সন্তানরা, তোমাদের ভ্রাতাগণ, তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের আপনগোষ্ঠী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালবাস, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না। (সুরা তওবা-২৪)
আবার অনেকে ইসলামের দাওয়াতকে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়বস্তুর উপর সীমাবদ্ধ রেখেছে! জেহাদ, আহলে বায়াত, খেলাফত, রাজতন্ত্র এসব আলোচনা করলে নাকি ফেতনা ছড়াবে! তাই অন্যদের দাওয়াতে বাধা দেয়। ভাই, আগে বুঝেন- কুরআন, সুন্নাহে এমনকিছু নেই যে আলোচনা করলে ফেতনা ছড়াবে।
এমন যদি হত রসুল (সা:) ও সাহাবীরা হাদীস বর্ননা ও ব্যাখা করতেন না! বরং ইসলাম মিথ্যাকে ধ্বংস করে ফেতনামুক্ত করে, সত্য প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখে!!
আল্লাহ বলেন - বল, ‘সত্য এসে গেছে আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত হওয়ারই। (সুরা বনী ইসরায়েল -৮১)
কুরআনে এসেছে -
নিশ্চয় তা (কুরআন সত্য-মিথ্যার) পার্থক্যকারী বাণী। (সুরা আত্ব তারিক -১৩)
তাই কুরআন, সুন্নাহর সাথে মিলে এমন সকল মতবাদ আমাদের গ্রহন করতে হবে, আর বিপরীত সকল মতবাদ পরিতাজ্য তা যেই বলুক না কেন!
যারা তাগুত,আল ওয়ালা ওয়াল বারা, আহলে বায়াতের ফজিলত বর্ননা করে না যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারা আসলে কি ইসলামের খেদমত করছে!! না জনপ্রিয় হওয়া ও অর্থ কামানো মূল লক্ষ্য।
গনতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ নিয়ে একই মাযহাবের আলেমের মত ভিন্ন ভিন্ন - কারো মতো শিরক,কারো মতে এই যুগে জায়েজ। উম্মত এই নিয়ে বিভ্রান্ত।
আকীদা ভিন্ন হয়েও তারা উভয়ই একই মাযহাবের(অদ্ভুত)
, উভয়ই সম্মান পায় অথচ সামান্য মাসয়ালাগত দ্বন্দ্ব নিয়ে অন্যদের ওরাই কাফের ফাতেয়া দেয়!!
ঈমাম ও আলেমগণ হলো জানার মাধ্যম যার ভিত্তিতে রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ জানা হয়, যা মিলল তা মানলে রসুলের (সাঃ) সুন্নাহ, বা পথ মানা হয়।
SalSabil
0 মন্তব্যসমূহ