ওয়ালা এবং বারাকে কলুষিত করার উদ্দেশ্য -১পর্ব
“ ইসলামের শত্রুরা অন্তরের তীব্রভাবে আল ওয়ালা ওয়াল বারাকে ঘৃণা করে।
ইসলামের প্রত্যকে শত্রুর একান্ত চাওয়া - ওয়ালা এবং বারাকে বিভ্রান্তির বেড়াজালে বন্দী করে ফেলা।
মুসলিমরা বাহ্যিকভাবে ইসলাম ধারণ করুক, তাদের মুসলিম নাম থাকুক, নিজেদের মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিক, এতে তাদের কোন সমস্যা নেই।
কিন্ত তারা চায় - মুসলিমদের ভেতরটা যেন হয় ফাঁপা, অন্তর যেন হয় ঈমানশূন্য।
কোন মুসলিমকে ধর্মান্তরিত করা খুবই কঠিন। একজন মানুষ একবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহতে বিশ্বাসী হলে যতো কিছুই হোক না কেন, তার রেশ ঐ ব্যক্তির অন্তরে থেকেই যায়।
একবার যে অন্তরে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর ছাপ পড়ে সেই, অন্তর থেকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর ছাপ পুরোপুরি মুছে ফেলা খুবই কঠিন।
এইজন্য ইহুদী বা খ্রিষ্টানরা চায় না মুসলিমদেরকে তাদের ধর্মে নিয়ে আসতে, তারা চায় মুসলিমদেরকে ইসলাম থেকে দূরে নিয়ে আসতে।
এখন চিন্তা করুন তো,
কিভাবে খুব সহজে মুসলিমদের তাঁদের ধর্ম থেকে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব?
- মুসলিমদের আল ওয়ালা ওয়াল বারা ভুলিয়ে দেওয়া,
বা অন্তত পক্ষে ওয়ালা এবং বারা সহ ইসলামের সঠিক শিক্ষা ভুলিয়ে দেওয়া।
এই কারনেই কাফেররা বারবার মুসলিম দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থা, সিলেবাস, কারিকুলামে নাক গলায়। তারা কারিকুলাম থেকে আল ওয়ালা ওয়াল বারার আলোচনা বাদ দেওয়ার অথবা ভুল ব্যাখ্যা তুলে ধরার জন্য হস্তক্ষেপ করে।
আন্তধর্মীয় কার্যক্রম এমনই আরেকটা অস্ত্র - আল ওয়ালা ওয়াল বারাকে মুছে ফেলার।
বর্তমান বিশ্ব ইন্টারফেইথ বা আন্তঃধর্মীয় কর্মকান্ডের নামে যা হয়, তার সবগুলো মৌলিক দিকের উদ্দেশ্য হল - মুসলিমদের আল ওয়ালা ওয়াল বারা নষ্ট করে দেওয়া।
জাযিরাতুল আরবের অনেক আলিমের বক্তব্য দিয়েছিলেন - যারা আন্তঃধর্মীয় কর্মকান্ডকে কুফর বলেছেন কিংবা যারা এই আদর্শ গ্রহণ করে, বিশ্বাস করে ও প্রচার করে; তাদেরকে কাফির বলেছেন।
দুই পবিত্র ভূমির মাসজিদের একজন আলিম, যুগের মুরজিয়ারা যাকে অনুসরণের দাবি করে;
তিনি বলেছেন - যে আন্তঃধর্মীয় কর্মকান্ডের দিকে আহ্বান করে, সে ইহুদী-খ্রিস্টানদের চেয়েও নিকৃষ্ট।
আমাদের সমাজে আজকাল অনেক মানুষ দেখা যায়, যারা নিজেদের ইসলামের দা’ঈ বলে দাবি করে। মানুষও তাদের ব্যাপারে এমন ধারণা করে, কিন্তু যারা আসলে ‘রুয়াইবিদাহ।’
তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সঠিক আকিদা নির্মূল করা।
তাদের এই জঘন্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আল ওয়ালা ওয়াল বারাহ এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর সঠিক বিশ্বাসকে ধ্বংস করার জন্য তারা আন্তঃধর্মীয় কর্মকান্ডের আড়ালে কাজ করে।
তারা এই কাজ সরাসরি করতে পারবে না। মুসলিমরা ক্ষেপে যাবে বাঁধা দেবে। তাই তারা আন্তঃধর্মীয় কর্মকান্ডের নামে তা করে।
আজ যেসকল পাশ্চাত্যের দাঈ এবং শায়খগন উম্মাহকে ওয়ালা এবং বারা ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছে, বিভ্রান্তি আর বিকৃতি ছড়াচ্ছে, ইসলামের শত্রুদের পক্ষে কাজ করছে;
১২-১৩ বছর আগে ঠিক এই লোকগুলোর ব্যাপারেই মনে হত তারা ওয়ালা এবং বারার প্রশ্নে আপোষহীন।
তাদের তখনকার বক্তব্য দিয়ে তাদের আজকের বক্তব্য খন্ডন করা যাচ্ছে। তাদের ঐ সময়ের লেকচারগুলোই তাদের বর্তমান বিভ্রান্ত দাবীর অসারতা প্রমাণ করার জন্যে যথেষ্ট।
শুধু পাশ্চাত্যে না, ভারতীয় উপমহাদেশ বা আরবেও অনেক দাঈ এবং শায়খ এভাবে বদলে গেছেন। ২০০১ এর আগে তাদের আকিদা আর চেহারা কেমন ছিল তা খুঁজে দেখুন। আর তাদের আজকের আকিদা আর বেশভুষা দেখুন।
তারা আল ওয়ালা ওয়াল বারাকে ছেটে ফেলেছে, তাই আল্লাহ চেহারা এবং বেশভূষায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসারী হওয়া থেকে তাদেরকে ছেটে ফেলেছেন।
তাদের আলোচনা শুনলে দেখবেন, তারা আল ওয়ালা ওয়াল বারাকে ছেটে ফেলেছে আর তাদের চেহারার দিকে তাকালে দেখবেন তারা আল্লাহর রাসূলের সুন্নাহকে ছেটে ফেলেছে।
আপনি নিজেই যাচাই করে দেখুন। যাচাই করুন, তুলনা করুন। ভাবুন।
কী অবিশ্বাস্য , কাকতালীয় ব্যাপার, তাই না?
হঠাৎ করে এই সব লোকের আকিদাহ ২০০১ এর পর বদলে গেল। রাতারাতি তাদের নীতি পালটে গেল।
সবাই একসঙ্গে! হুট করে!
তাদের ওপর কি এমন কোন অহী নাযিল হয়েছে যার ব্যাপারে আমরা জানি না?
কেন এমন হল? ”
- শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল হাফিজাহুল্লাহ
0 মন্তব্যসমূহ