রাখাল

 রাখাল



“ রাসূলুল্লাহর ﷺ একটি হাদিসে, যা একাধারে সহিহ বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, আহমাদে এসেছে।


রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
‘তোমাদের প্রত্যেকেই হলে রাখাল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ পালের ব্যাপারে দায়িত্বশীল।
একজন পুরুষ তার পরিবারের রাখাল আর এই ব্যাপারে সে দায়িত্বশীল।
একজন নারী তার স্বামীর বাড়ির রাখাল এবং এইজন্য সে দায়িত্বশীল।’
[ আল আদাবুল মুফরাদঃ ২১২ ]

একজন পুরুষ, সে নিজ পরিবারের রাখাল, অর্থাৎ এই পালের ব্যাপারে দায়িত্বশীল।
আপনাকে এই ব্যাপারে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আপনার পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যের ব্যাপারে আপনি জিজ্ঞাসিত হবেন।

যদি আপনি জানেন যে আপনার সন্তানদের জন্য এমন দুর্ভোগ আসতে পারে, আপনার সন্তানরা দ্বীনের মৌলিক বিষয়ে অটল নাও থাকতে পারে;
তাহলে আপনি তাদেরকে ধোঁকা দিলেন আর এজন্য আপনাকে পস্তাতে হবেই হবে।

আম্বিয়াগণ ( আলাইহিমুস সালাম ) নিজেদের ব্যাপারে শির্কের ভয় করতেন,
আর আজকে এটা কিনা সবচেয়ে হালকা বিষয় হয়ে গেল?

তাঁরা কিন্তু এমন পরিবেশে ছিলেন না, যেখানে মুসলিমদেরকে দ্বীন ত্যাগ করানোর জন্য মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করা হতো।
তারপরেও তাঁরা সবসময় অজানা এক আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতেন।

কাফির মুশরিকরা আজ আমাদের পেয়ে বসেছে, আমরা তাদের মাঝে বসবাস করছি।
ওদের স্কুল, শিক্ষাব্যবস্থা, মিডিয়া, জীবনব্যবস্থা সব কিছু আমাদের ওপর জেঁকে বসেছে।


মড়ার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে প্রতিনিয়ত ওরা কুটিল ষড়যন্ত্র করে চলছে আমাদের ঈমান কেড়ে নেবার জন্য।
মিলিয়িন মিলিয়ন ডলার ঢালছে।
পানির মতো টাকা খরচ করছে। মিডিয়া ক্যাম্পেইন করছে।

উম্মাহর মধ্যে দালাল নিয়োগ যারা ছলেবলেকৌশলে আমাদেরকে দ্বীন থেকে বের করে নিচ্ছে।

অথচ আপনি যদি এখানকার কোনো বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করেন যে,
সন্তানদের ব্যাপারে কোন বিষয়টা নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা সবচেয়ে কম?
- সেটা হবে শির্ক বা কুফরে পতিত
হবার আশঙ্কা।

এর কারণ কি বলে মনে হয় আপনার?
ঐ সন্তানদের কথা পরে আসুক,
তাদের বাবা মায়েরাই আসলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর অর্থ বোঝেনি।

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ঘর সাজাবার কোনো ব্যানার নয়।
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কোনো গহনা বা জমির দলীল নয় যে, আপনি
আপনার সন্তানদের হাতে তা তুলে দেবেন আর তারা তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম জুড়ে পরম যত্নে আগলে রাখবে।

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ খুব গভীর, খুব ওজনদার।
এইটাকে বুকে ধারণ করার জন্য অবশ্যই আগে এর অর্থ বুঝতে হবে। আত্মস্থ করতে হবে।


যে কোনো সময় এটি হারিয়ে যেতে পারে। অসতর্ক হওয়া যাবে না।
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এখানকার বহু সংখ্যকের কাছ থেকেই হারিয়ে গিয়েছে।

তাই আমাদের শত্রুরা প্ল্যান করেছে যে মুসলিমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কেবল মুখে মুখেই বলুক,
কিন্তু তারা যেন সেটা নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করতে না পারে। তাকে ‘ইসলাম’ শিখতে দাও;
কিন্তু প্রকৃত ইসলাম নয়, বিকৃত, মডারেট ইসলাম।


তাদেরকে ‘ইন্টারফেইথ’ দাও;
তাদেরকে সেকুলারিজম, ঐতিহ্য, প্রথা, বিজাতীয় সংস্কৃতি, নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা, ভ্রান্ত পথে জীবন পরিচালনা, আইডল, উৎসব
দাও।
কেবল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ থেকে বাইরে নিয়ে যাও।


সে মুখে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলছে, বলুক যতো খুশি;
কিন্ত কক্ষনো যেন সেটার ওপরে আমল করতে না পরে,
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কে কেন্দ্র করে
জীবন পরিচালিত করতে না পারে। ”

- শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল হাফিজাহুল্লাহ

0 মন্তব্যসমূহ